কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের জানালার পাশে মিলল এক নবজাতকের অর্ধগলিত লাশ। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকাল ৯ টায় দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের পশ্চিম পাশের জানালা সংলগ্ন এবং বিষ খাওয়া রোগীদের চিকিৎসা দেয়া চৌকির পাশে। স্থানীয় ফয়েজ আহমেদ নামে এক যুবক জানান, তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে একজন অসুস্থ্য রোগী নিয়ে আসলে পঁচা গন্ধ পান। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সহকারিরা নাক ঢেকে স্বাভাবিক কাজ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। রোগির ওই স্বজন দূর্গন্ধের উৎস খুঁজতে বের হয়ে জরুরী বিভাগের জানালার পাশে ড্রেনে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা ওই অর্ধগলিত নবজাতকের লাশ দেখতে পান। এ ব্যাপারে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মো. আব্দুল্লাহ আল কাউছার জানান, দূর্গন্ধ পাচ্ছিলাম ঠিকই, পরে এক লোক জরুরী বিভাগের জানালার পাশে নবজাতকের গলিত লাশ দেখতে পেয়ে আমাদের জানান। আমরা ব্যাবস্থা নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহীত করি। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নবজাতকের গলিত লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। স্থানীয়রা জানান, এ হাসপাতালের সভাকক্ষের পেছনে, আবাসিক এলাকার পরিত্যাক্ত জায়গায়, হাসপাতালের পশ্চিম পাশের পুকুরে এবং ড্রেনে প্রায়ই নবজাতকের মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর তদন্ত কমিটি হয়, পরবর্তীতে ওই সমস্ত তদন্ত কমিটি ফলাফল কখনো আলোর মুখ দেখতে পায়নি।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক আবাসিক ডাঃ মঞ্জুর রহমান বলেন, ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত চলছে, গত ১ অক্টোবর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ডেলিভারী রেজিস্টার দেখে তদন্ত করা হবে। যদিও রেজিস্টারের অন্তর্ভূক্ত কোন নবজাতক এভাবে ফেলে দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এটা অপগর্ভও হতে পারে। হাসপাতালের এতো জায়গা থাকতে ইমার্জেন্সী কক্ষের পাশে ফেলে রাখার বিষয়টি জটিল। আমরা সিসি ক্যামেরার আওতায় সমস্ত এলাকা পর্যবেত্ষণ করছি। এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।
তদন্তে আসা দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মো. জামশেদুল আলম জানান, নবজাতকের লাশ দেখে মনে হয় শিশুটি পূর্নাঙ্গ ছিল এবং ৩/৪ দিন আগের। ডেলিভারী রেজিস্টার দেখছি, দায়িত্বরতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্তের পূর্বে বিস্তারিত কিছু বলা যাবেনা। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মহিবুস সালাম খান মোবাইল ফোনে জানান, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি, আমাদের হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার অনেকগুলো সংযোগ ডিসকানেক্ট হয়ে আছে। তাছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেজিস্টারের কোন শিশু এভাবে ফেলার সুযোগ নাই, কেউ হয়তো অপগর্বজাত শিশুটিকে হাসপাতালে ফেলে গেছে। দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত) মো. মাঈনুদ্দিন জানান, আমার বিষয়টা তদন্ত করছি, তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।